লাইফস্টাইল ডেস্ক: মুখের দাগ কম-বেশি সবারই থাকে। দাগ হওয়াটা ততটা বিপজ্জনক নয়, যতটা তা ত্বকে থেকে যাওয়া। আমরা অনেক সময়ই মুখের দাগকে গুরুত্ব দিই না। ফলে তা বাড়তে থাকে এবং একসময় গিয়ে তা মুখের ত্বকে স্থায়ী হয়ে যায়। বাড়াবাড়ি হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন। কিন্তু এমন কিছু ঘরোয়া উপায়ও রয়েছে, যা এই সমস্ত নির্মূল করতে দারুণ উপকারী।
মুখের দাগের একটি প্রধান কারণ, ত্বকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ। যার ফলে ত্বকে দেখা দেয় ব্রণ-ফুসকুড়ি। ব্রণ সেরে গেলেও দাগ রয়ে যায়। অনেক সময় ব্রণ হওয়ার পর তাতে বারবার হাত দেওয়ার থেকেও হতে পারে দাগ। এছাড়া মুখের পোরস বন্ধ হয়ে গেলে যে তেল নিঃসরণ হয়, তাতে ময়লা-তেল সব মিশে ত্বকের উপরিভাগ অর্থাৎ এপিডারমিস লেয়ারে তৈরি হয় ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইট হেডস এবং এগুলো জমতে জমতে একসময় তা পিগমেন্টেশনের আকার নেয়। আর ত্বকের একদম নিম্নভাগ, অর্থাৎ ডারমিস লেয়ারে এর প্রভাব পড়লে দেখা দেয় অ্যাকনে।
১। ক্যালামাইন লোশন ব্রণ বা অয়েলি স্কিনের ব্লেমিশের জন্য খুব কার্যকরী। সরাসরি ত্বকে লাগিয়ে নিন। কয়েক ঘণ্টা অন্তর অ্যাপ্লাই করুন। প্রতিবার ব্যবহারের আগে মুখ ধুয়ে নিন পানি দিয়ে। কারণ ক্যালামাইন লোশনে থাকে জিঙ্ক, যা অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়। ফলে ব্রণর সমস্যাও কমে।
২। কোকো বাটার যে কোনও দাগছোপের জন্য কার্যকরী। ড্রাই স্কিনের জন্য খুব সামান্য পরিমাণে কোকোবাটার নিয়ে ত্বকের দাগ যুক্ত অংশে লাগিয়ে নিন। সারা রাত রাখুন। কোকো বাটারে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি, যা ব্লেমিশ হালকা করে ত্বককে হাইড্রেট করে।
৩। ১ চা চামচ বেকিং সোডা এবং অল্প জল বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিয়ে পেস্ট করুন। ওই পেস্ট ত্বকের দাগযুক্ত অংশে দিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ দিন করুন। বেকিং সোডা ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখে, ডেড সেল রিমুভ করে।
৪। ডিমের সাদা অংশ ব্রাশ বা হাতে নিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ধোয়ার পর স্কিন টাইপ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এটা সপ্তাহে ২ দিন করুন অবশ্যই।
৫। ১ ভাগ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার, ৪ ভাগ জল মিশিয়ে স্প্রে বোতলে করে রেখে দিনে দু’বার মুখে স্প্রে করুন। এই সলিউশন ত্বকে পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখে, ব্লেমিশ হালকা করে।
৬। অ্যালোভেরা খুব কার্যকরী দাগছোপের জন্য। সরাসরি অ্যালোভেরা গাছের পাতা থেকে ক্বাথ নিয়ে মুখে লাগাতে পারেন বা অ্যালোভেরা জেল কিনতেও পারেন। যে সমস্ত জায়গায় দাগছোপ রয়েছে, সেখানে অল্প করে নিয়ে লাগিয়ে দু’-তিন মিনিট মাসাজ করুন। ১০-১৫ মিনিট ছেড়ে দিন। এবার ধুয়ে ফেলুন। দিনে দু’বার দিতে পারেন। অ্যালোভেরা ত্বককে দ্রুত সারায়, দাগছোপ হালকা করে, রিজুভিনেট করে ত্বককে। অয়েলি স্কিনের জন্য বিশেষভাবে উপকারী অ্যালোভেরা।
৭। মধু সরাসরি দাগের ওপর লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। তারপর প্লেন জলে ধুয়ে ফেলুন। মধু দ্রুত দাগ হালকা করে। মধুতে রয়েছে হিউমেকট্যান্ট, যা ত্বককে নারিশমেন্ট দেয়। এর স্কিন লাইটেনিং প্রপার্টি ত্বকের দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। ত্বককে ফ্রি র্যাডিকল্স থেকে বাঁচায়, নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে মধু।
৮। আলুর রস নিয়ে ১০ মিনিট মুখে লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দিনে ১ থেকে ২ বার করুন। আলুতে রয়েছে এনজাইম ও হালকা ব্লিচিং এজেন্ট, যা দাগছোপ হালকা করতে সাহায্য করে।
৯। লেবুর রস সরাসরি দাগযুক্ত অংশে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন যদি আপনার ত্বক সেনসিটিভ হয়। তবে লেবুর রসে অল্প জল মিশিয়ে নিন। সরাসরি দেবেন না।
এছাড়াও ত্বক যথাসম্ভব পরিষ্কার রাখুন। শুতে যাওয়ার আগে ত্বকের সমস্ত মেকআপ তুলে ফেলুন। দিনে ২ থেকে ৩ লিটার পানি ও মৌসুমি শাকসবজি-ফল নিয়মিত খান।
মুখের দাগের একটি প্রধান কারণ, ত্বকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ। দাগের জন্য অ্যালোভেরা খুব কার্যকরী। মধু, লেবুর মধ্যেও রয়েছে দাগ মেটানোর গুণ।